মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা সম্পর্কে লিখ।অথবা, মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী সমস্যার বর্ণনা দাও
উত্তর : ভূমিকা : মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলার নারী-পুরুষ সকলে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয় । পাক সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা বাঙালি বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত সবাইকে এক কাতারে এনে নির্মমভাবে হত্যা করতে থাকে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে বিশ্ববাসী নিন্দাজ্ঞাপন করলেও তারা ক্ষান্ত হয় নি; বরং এদেশের অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ পর্যন্ত তাদের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অনেক নারীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা
পাক সেনাদের এই নির্মমতার হাত থেকে রক্ষা পেতে লক্ষ লক্ষ মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মায়ানমারে আশ্রয় নেয়। এই বিপুল সংখ্যক মানুষ ভারত ও মায়ানমারে নানা সমস্যার মধ্যে অবস্থান করে। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলে তাদের এদেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা :
পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক বাঙালি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মায়ানমারে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করে। সে সময়ে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতে এবং প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ মায়ানমারে আশ্রয় গ্রহণ করে। এদেশের নাগরিক শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করার ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়, যেগুলোর কিছু অংশ নিম্নে আলোচনা
করা হলো :
মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা

১. স্থানীয় ও সরকারি চাপ :
প্রথম পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মায়ানমারের স্থানীয় জনগণ ও সরকার বাংলাদেশের শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে চায় নি, তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে, যাতে বাঙালিরা নিজ দেশে ফিরে যায়। বাংলাদেশের সর্বত্র যুদ্ধ ও সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতনের ভয়ে শরণার্থী মানুষগুলো ভারত ও মায়ানমারের চাপ সত্ত্বেও সেখানে অবস্থান করে ।
মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা

২. আবাসন ও খাদ্য সমস্যা :
পরবর্তীকালে ভারত ও মায়ানমার সরকার বাঙালিদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়দান করলেও পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা ও খাদ্যের সংস্থান করে নি। আবাসন ও খাদ্য সমস্যার ফলে বাঙালি শিবিরে অনেকে নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন এবং অপর্যাপ্ত ও অপুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে অনেকে
অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী সমস্যা

৩.ভারত ও মায়ানমারের শর্ত প্রদান:
বাঙালি শরণার্থী শিবির ভারত ও মায়ানমারে আশ্রয় গ্রহণ করায়। এই দুই দেশ আলাদাভাবে শরণার্থীদের উপর শর্ত প্রদান করে।
ভারত শর্ত প্রদান করে যে, বাংলাদেশের যুদ্ধ শেষে অবশ্যই ১৯৭২ সালের জানুয়ারির মধ্যে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। আর মায়ানমার সরকার শর্ত প্রদান করে যে, বাঙালিরা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে, তবে কোনো প্রকার যুদ্ধের পরিকল্পনা বা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। তাদের সাধারণ শরণার্থী হিসেবে থাকতে হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস pdf download..
উপসংহার :
পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা নিরীহ বাঙালিদের উপর নানারকম দমন-নিপীড়ন চালায়। তারা নির্মমভাবে সাধারণ বাঙালিদের হত্যা করে। যার ফলে লাখ লাখ বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারত ও মায়ানমারে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং অমানবিক জীবনযাপন করে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর: ১৯৭১ এ যুদ্ধের সময় ভারতে শরণার্থী ক্যাম্পের জীবন কেমন ছিল?
- Class 7 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি Guide Book PDF 2025 Download – Lakhokonthe Education
- Class 7 গণিত Guide Book PDF 2025 Download – Lakhokonthe Education
- Class 7 ইংরেজি ২য় পত্র Guide Book PDF 2025 – সহজে ডাউনলোড করুন Lakhokonthe Education ওয়েবসাইট থেকে
- Class 7 বাংলা ২য় পত্র Guide Book PDF 2025 – সহজেই ডাউনলোড করুন Lakhokonthe Education ওয়েবসাইটে
- (no title)