প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা

প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা

প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিকল্পনায় শাসনব্যবস্থা ও প্রতিরক্ষার কাজ সম্পাদন করার জন্য যে অভিভাবক শ্রেণীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাদেরকে যদি উপযুক্ত পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয় তাহলে তারা দেশের অগ্রগতি সাধন করবে। একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে প্রত্যেকের চারিত্রিক গুণাবলির উন্নতি ও পরিবেশ বিকাশ পরিলক্ষণ করা যাবে।

গ্রিকনগর রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনাই হচ্ছে প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র শিক্ষা ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।  তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ “দি রিপাবলিকেশন” এই বইটিতে আদর্শ রাষ্ট্রের একটি কল্পনার চিত্র পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরেছেন।

বলা বাহুল্য, প্লেটো তিনার এই বইয়ে কোন কিছু উপস্থাপনা করতে গিয়ে ঐতিহাসিক কোন বিষয়ের আশ্রয় গ্রহণ করেননি। বরং একটি আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের শিক্ষা ব্যবস্থার যতটুকু উন্নত হওয়ার দরকার সে বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান প্রদান করেছেন।

প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা
প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা

প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের এই দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং তিনি একটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনার বিখ্যাত বইয়ে এর কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরেছিলেন।

যেহেতু প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক কাঠামো ছিল সম্পূর্ণ কাল্পনিক তাই তিনার এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে কাল্পনিক শিক্ষাব্যবস্থা নামে অভিহিত করা হয়। তবে তার রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি ছিল অতুলনীয় কার্যকরী।

প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থার মূলনীতি ও মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে উপস্থিত জনগণের চারিত্রিক গুণাবলির উন্নতি ও বিকাশ পরিলক্ষন করা। 

প্লেটো তার “দি-রিপাবলিকেশন” বইয়ের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্কে এত বেশি আলোচনা করেছেন যে অনেকেই এই বইকে মূল শিক্ষা বই সম্পর্কে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকের মতে এটি কোন রাজনৈতিক গ্রন্থ নয় বরং এটি ওই গ্রন্থ যার মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার পরিপূর্ণ নিয়ম উল্লেখ রয়েছে। আজকে আমরা প্লেটোর এই বইটি হতে প্লেটোর আদর্শের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা অর্জন করার চেষ্টা করব এবং সে অনুযায়ী পাঠ প্রদান ও গ্রহণ করব।

প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী শিক্ষার কারিকুলাম ও বিভিন্ন স্তর

প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থা অনুযায়ী শিক্ষার কারিকুলাম বা স্তর হচ্ছে দুই প্রকার, যথা:

  1. প্রাথমিক শিক্ষা স্তর (যার বয়স সীমা হতে হবে ১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে)
  2. উচ্চ শিক্ষা স্তর (যার বয়সের সীমা হতে হবে ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে)

উচ্চ শিক্ষা স্তরের আবার তিনটি বিভিন্ন স্তর রয়েছে, এগুলো হলো:

  • যে উচ্চশিক্ষার বয়সসীমা হতে হবে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
  • যে উচ্চ শিক্ষার বয়সসীমা হতে হবে ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
  • যে উচ্চ শিক্ষার বয়সসীমা হতে হবে ৩৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

প্লেটোর প্রাথমিক শিক্ষা স্তর

এই শিক্ষার বয়সের সীমা হচ্ছে শৈশব হতে অর্থাৎ শিশুর এক বছর হতে শিশুর ২০ বছর পর্যন্ত।  এর মধ্যে শিশু পুরো 18 বছর সাহিত্য, সংগীত এবং প্রাথমিক নিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে ও বাকি দুই বছর সংরক্ষিত থাকবে বা অবহেলিত থাকবে।

মূলত এই শিক্ষায় শিক্ষার্থী প্রতিরক্ষামূলক শিক্ষা ও সামরিক সকল ধরনের উপকরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। কোন বিষয়ের উপর অবকাশ ও জ্ঞান ধরনের জন্য শিক্ষার্থীকে উৎসাহিত করাই হচ্ছে এই শিক্ষার কাজ।

প্লেটোর উচ্চ শিক্ষা স্তর

প্লেটোর উচ্চশিক্ষা ঈশ্বরের বয়সের সীমা হচ্ছে শৈশবে পেরিয়ে ২০ বছর থেকে ৫০বছর পর্যন্ত এবং এ বয়সে সীমাকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন ২০ থেকে ৩০, ৩০ থেকে ৩৫ এবং ৩৫ থেকে ৫০।

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থী তার জীবনের প্রতিটি লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত হয় এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। দেশাত্মবোধের, দেশ রক্ষা সহ সাহিত্য, উচ্চতর গণিত, উচ্চতর দর্শন, জ্যামিতি, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করে।

এটি হচ্ছে শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ শিক্ষা এবং এই শিক্ষা লাভ করার পাশাপাশি শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে এবং বড় পদের মধ্যে যুক্ত হতে পারে।

আরও পড়ুন: প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থা