Table of Contents
শক্তিশালী ব্রান্ড গঠন
উত্তর: ভূমিকা: প্রতিযোগীতামুলক বাজারজাতকরণ সর্বোচ্চ সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ব্র্যান্ড। আর এই ব্র্যান্ডকে শক্তিশালী করণের জন্য কোম্পানিকে বিভিন্ন ধরণের কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হয়।
কৌশলগত সিদ্ধান্তসমূহ:
বাজারজাতকরণ কোম্পানিগুলোকে শক্তিশালী ব্র্যান্ড উন্নয়নের জন্য যেসব কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় তা নিম্নরূপ:
(ক) ব্র্যান্ড অবস্থান গ্রহন ব্র্যান্ড অবস্থান গ্রহন বলতে ক্রেতাদের হৃদয়ে ব্র্যন্ডের স্থান করে নেয়াকে বুঝায়। এজন্য কোম্পানিকে নিম্নরূপ তিনটি কৌশল অবলম্বন করতে হয়। যথা-
(i) পণ্যের গুণাবলি: এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো নিজস্ব ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কার্যকারিতা এবং অন্যান্য গুনাগুণ ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরার প্রচেষ্টা গ্রহন করে।ও
(ii) সুবিধাবলি: ব্র্যান্ডের গুনাগুণ এবং কার্যকারিতা তুলে ধরার পাশাপাশি ব্র্যন্ডে প্রত্যাশিত সুবিধা বর্ণনা করার কৌশল গ্রহন করে থাকে।
(খ) ব্র্যান্ড নাম নির্বাচন: শক্তিশালী ব্র্যান্ড গঠনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হচ্ছে ব্র্যান্ড নাম নির্বাচন। বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের সাফল্য বাহুলাংশে নির্ভর করে একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় ব্র্যান্ড নামের উপর। এক্ষেত্রে কোম্পানিকে ব্র্যান্ড সম্পর্কে ধারণ প্রদান, সহজবোধ্য, স্বাতন্ত্র্যতা, বিস্তৃতি, অনুবাদযোগ্য এবং নিবন্ধন ও আইনগত সুরক্ষার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা উচিত।
(গ) ব্র্যান্ড পৃষ্ঠপোষকতা : ব্র্যন্ড পৃষ্ঠপোষকতা শক্তিশালী ব্র্যান্ড গঠনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে কোম্পানিকে অত্যন্ত সুকৌশলে সিদ্ধান্ত গ্রহন করার প্রয়োজন হয়। ব্র্যান্ড পৃষ্ঠপোষকতার জন্য কোম্পানিগুলো নিম্নলিখিত চারটি উপায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। যথা- হাতে
(i) উৎপাদনকারীর ব্র্যান্ড: পণ্যের উৎপাদনকারি কর্তৃক সৃষ্ট উদ্ভাবিত এবং স্বত্বপ্রাপ্ত ব্র্যান্ডকে উৎপাদনকারির ব্র্যান্ড বলে অভিহিত করা হয়। এক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয় অধিক হয়ে থাকে। ফলে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পায়।
(ii) প্রাইভেট ব্র্যান্ড প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড বলতে বিভিন্ন মধ্যস্থ কারবারি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও বাজারজাতকৃত ব্র্যান্ডকে বুঝানো হয়।
(iii) লাইসেন্সিং: লাইসেন্সিং হচ্ছে এমন একটি কৌশল যেখানে কোনো একটি কোম্পানি নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে অন্য একটি কোম্পানির লাইসেন্স ব্যবহার করে থাকে। যেমন- Coca-Cola.
(iv) যৌথ-ব্র্যান্ডিং: দুই বা ততোধিক কোম্পানি চুক্তিবদ্ধভবে যৌথ ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করলে তাকে যৌথ-ব্র্যান্ডিং বলে। যেমন- ইউনিলিভার। Colgate-Palmoliv ইত্যাদি।
(ঘ) ব্র্যান্ড উন্নয়ন: ব্র্যান্ড উন্নয়ন বলতে বর্তমান প্রচলিত ব্র্যন্ডের পাশাপাশি নতুন নতুন ব্র্যান্ড সৃষ্টি করাকে বুঝায়। শক্তিশালী ব্র্যান্ড গঠনের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড উন্নয়ন অত্যন্ত উপযোগী ও কার্যকরী ব্র্যান্ড কৌশল হিসেবে বিবেচিত। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো চারভাগে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। যথা-
(i) ব্র্যান্ড সারি বর্ধিতকরণ: বাজারে প্রচলিত একই ব্র্যান্ডের নামে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অতিরিক্ত পণ্য সংযুক্ত করাকে ব্র্যান্ডসারি বর্ধিতকরণ বলে। যেমন- বিভিন্ন ধরনের Lux সাবান।
(ii) ব্র্যান্ড বর্ধিতকরণ: বাজারে প্রচলিত একই ব্র্যান্ড নামে নতুন নতুন পণ্য সয়যোজন কররে তাকে ব্র্যান্ডে বর্ধিত করা বলে। যেমন- কেয়া ডিটারজেন্ট, কেয়া সাবান ইত্যাদি।
(iii) বহু ব্র্যান্ড: কোনো কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন নামে একই জাতীয় পণ্য ব্যবহার করলে তাকে বাহু ব্র্যান্ড বলে। যেমন- ইউনিলিভারের Lux, Lifeboy ইত্যাদি।
(iv) নতুন ব্র্যান্ড: কোম্পানিগুলো যখন বাজারে প্রচলিত ব্র্যান্ডের পরিবর্তে সম্পূর্ণ নতুন ব্র্যান্ড নামে পণ্য উৎপাদন করে তখন তাকে নতুন ব্র্যান্ড বলে।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, শক্তিশালী ব্র্যান্ড গঠনের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো উল্লেখিত কৌশলসমূহ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে।
ব্রান্ডিং এর গুরুত্ব / সুবিধা সমূহ আলোচনা কর।