বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা সংক্ষেপে লিখ ।অথবা, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা আলোচনা কর ।
Table of Contents
শুরুর কথা:
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত অত্যন্ত ইতিবাচক ও দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন প্রকার সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত অবদান রাখে।
যুদ্ধের কারণে দেশত্যাগী উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দান, সশস্ত্র সংগ্রামীদের প্রশিক্ষণে সহায়তা, অস্ত্র ও সামরিক সাহায্য প্রদান সর্বোপরি প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তার জন্য ভারত বাংলাদেশের উপর একটি স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে আছে ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা :
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দান :
পাক-হানাদারদের অতর্কিত আক্রমণে বাংলার মানুষ অত্যন্ত সংকটময় পরিস্থিতির শিকার হয়। হাজার হাজার নারী-পুরুষ জীবনরক্ষার জন্য বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে তারা আশ্রয়হীন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়। অনেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে চলে যায়। এ সংকটকালীন মুহূর্তে ভারত সরকার আশ্রয়হীন মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয় । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দান করে ভারত অত্যন্ত মহৎ ভূমিকা পালন করে।
২. গেরিলাদের প্রশিক্ষণে সহায়তা :
পাক সেনাদের বর্বর হত্যাযজ্ঞের কারণে দেশের কোথাও নিরাপত্তা ছিল না। অসহায় জনগণকে রক্ষা এবং পাকবাহিনীকে বিতাড়িত করতে সর্বসাধারণ অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। কিন্তু তাদের কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না । তাই দেশের অভ্যন্তরে ভয়ানক ধ্বংসলীলা বিরাজমান থাকায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রভাবে গেরিলা ইউনিট করে অনেক দলকে ভারতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। ভারত সরকার গেরিলাদের প্রশিক্ষণে যথেষ্ট সাহায্য-সহযোগিতা করে ।
৩. অস্ত্র সাহায্য :
পাক হানাদারদের প্রতিহত করতে মুক্তিযোদ্ধাগণ প্রতিরোধ ব্যূহ গড়ে তোলেন। কিন্তু পাকবাহিনী ছিল আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের পর্যাপ্ত অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে ভারত মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট অস্ত্র সরবরাহ করে সহযোগিতা করে ।
৪. বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দান :
বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে এবং বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রিরা গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি প্রদান করেন । ভারতের এ স্বীকৃতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ।
৫. বাংলাদেশের সপক্ষে বিশ্ব জনমত গঠন :
পাক সেনাদের নির্মম আক্রমণে বাংলাদেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। এ করুণ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে প্রত্যক্ষ সাহায্য-সহযোগিতা করা ছাড়াও ভারত সরকার বাংলাদেশের উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্বের সকল দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
৬. প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অংশগ্রহণ :
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত শুধু সমর্থন দান এবং পরোক্ষভাবে সাহায্য- সহযোগিতাই করে নি, সংগ্রামেও ভারত অংশগ্রহণ করেছিল। নভেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচালিত বেলুনিয়া অভিযানের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ আরম্ভ। এরপর ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বিমান বাহিনী ভারতীয় বিমান ঘাঁটি আক্রমণ করলে ভারত প্রত্যক্ষভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে থাকে।
উপসংহার :
পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত অনন্য ভূমিকা পালন করে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাহায্য-সহযোগিতা দান ছাড়াও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণে ভারত মধ্যস্থতা করে । এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের সাথে ভারতের সহযোগিতার কথাও ইতিহাসে স্থান পায় ৷
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের জনগণকে আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতা করেছিল ভারত সরকার, তার জনগণ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বিশ^জনমত গড়ে তোলাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছিল।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস pdf :
দয়া করে ১ মিনিট অপেক্ষা করুন। কিছুক্ষন এর মধ্যে আপনাকে ডাউনলোড পেইজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। আপনাকে নিয়ে যাওয়ার পর আপনাকে হবে এই পেইজে ডাউনলোড লিংক দেওয়া হবে তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। ধন্যবাদ। আরো অন্যান্য বই গুলো নেওয়ার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে