মানবাধিকার রক্ষায় সুশাসনের ভূমিকা
The Role of Good Governance to Save Human Rights
আইনের শাসন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনের শাসন আবশ্যক।
কোনো রাষ্ট্রে আইনের অনুশাসন প্রচলিত হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পায়। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে মানবাধিকার রক্ষিত হয়।
বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা : আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাদানের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার এবং সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্বাধীনতা থাকলে মানবাধিকার খর্ব হতে পারে না।
অর্থাৎ, মানবাধিকার রক্ষায় সুশাসন অপরিহার্য।
৩। সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা : সুশাসন দেশের সাধারণ মানুষের জন্য সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। আইনের চোখে সবাই সমান।
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ধনী, গরিব সবার সম-অধিকার রক্ষায় সুশাসন কাজ করে। ফলে মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকে।
৪। মৌলিক অধিকার রক্ষা : নাগরিকের জন্য অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থানসহ সব মৌলিক অধিকার রক্ষায় সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই।
রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনকল্যাণ সাধিত হয় এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় ।
৫। গণতন্ত্রচর্চা : গণতন্ত্রকে সুশাসনের অন্যতম শর্ত বলা যায়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা মানবাধিকার রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গণতন্ত্রের সফলতার উপর মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে। তাই মানবাধিকার রক্ষায় গণতন্ত্রচর্চা জরুরি ।
৬। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য দূর : সুশাসন বিদ্যমান থাকলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সবাইকে সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা যায়।
রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য না থাকলে মানবাধিকার খর্ব হয় না।
৭। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা : মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকা জরুরি।
এগুলোর অভাব থাকলে বা অপব্যবহার হলে মানবাধিকার রক্ষা পাবে না এবং দেশের সার্বিক অগ্রগতি ব্যাহত হবে।
সুশাসন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সমস্যা দূর করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৮। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছাড়া মানবাধিকার রক্ষা করা অসম্ভব।
দেশের শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রয়োজন।
সুশাসন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রদানের মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষা করে।
৯। শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন : শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান না থাকলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
সুশাসন সঠিক গণতন্ত্রচর্চার মাধ্যমে রাষ্ট্রে শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রে মানবাধিকার রক্ষা করে।
১০। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ : সুশাসন প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
স্বায়ত্তশাসিত ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকারব্যবস্থা সুশাসনের অন্যতম উপাদান। সুশাসন প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের বিভিন্ন মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে।
পরিশেষে বলা যায়, মানবাধিকার রক্ষায় বা নিশ্চিতকরণে সুশাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সুশাসনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রচর্চা হয় এবং নাগরিকের অধিকার তথা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।