Table of Contents
ব্র্যান্ড ইক্যুইটি
উত্তর: ভূমিকা: ব্র্যান্ড ইক্যুইটি একটি কোম্পানির মূল্যবান সম্পদ। ব্র্যান্ডের সার্বিক শক্তি যা বাজার অবস্থান এবং কোম্পানিতে ভ্যালু সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ব্র্যান্ড ইক্যুইটির ফলে ক্রেতারা অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় কোম্পানির ব্র্যান্ডকে মৌলিকভাবে বণ্টন করে এবং অগ্রাধিকার দেয়। নিম্নে ব্র্যান্ড ইক্যুইটির সংজ্ঞা প্রদান করা হলো:
ব্র্যান্ড ইক্যুইটির সংজ্ঞা
Philip Kotler এবং Keven Lane Keller এর মতে,
ব্র্যান্ড ইক্যুইটি হলো পণ্য এবং সেবার উপর আরোপিত ভ্যালু।” Henry Assael বলেন, “Brand equity refers to the value of a brand name” অর্থাৎ ব্র্যান্ড ইক্যুইটি বলতে একটা ব্র্যান্ডনামের ভ্যালুকে বুঝায়।
Lamb, Hair এবং McDaniel-এর মতে, সফল কোম্পানি এবং “ব্রান্ড নামের ভ্যালুকেই ব্র্যান্ড ইক্যুইটি বলে।”
Stanton Etzel এবং Walker-এর মতে, “Brand equity is the value of a brand adds to a product” অর্থাৎ ব্র্যান্ড ইক্যুইটি হচ্ছে একটা পণ্যের সঙ্গে ব্র্যান্ড যুক্ত করার ভ্যালু। উপরিউক্ত সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করলে কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যায়-
(i) ব্র্যান্ড ইক্যুইটি হলো ব্র্যান্ডের সুনাম যা ভ্যালুর সাথে সম্পৃক্ত।
(ii) ব্র্যান্ডের ফলে প্রতিযোগীতামূলক সুবিধা পাওয়া যায়।
(iii) পরিচিত ব্র্যান্ড নামে নতুন পণ্য বাজারে ছাড়া সহজ হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রান্ড ইক্যুইটি হলো সফল কোম্পানির ইতিবাচক একটি পার্থক্যকৃত প্রভাব যা পণ্য বা সেবার ব্র্যান্ড নামের ভ্যালুর সম্পৃক্ত হয়ে ক্রেতারা সাড়া প্রদান করে।
ভোক্তারা ব্রান্ড বা পণ্য বিন্দুকে পণ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করে। ব্র্যান্ডিং করার ফলে পণ্যটি আরও মূল্যবান হয়ে ওঠে। কোম্পানিগুলোর প্রধান প্রধান ব্র্যান্ড সিদ্ধান্তসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো-কাকুর কাছে।
ব্র্যান্ড বর্ধিতকরণ সিদ্ধান্ত: ব্রান্ড বর্ধিতকরণ কৌশল হচ্ছে নতুন বা পরিমার্জিত কোন পন্য যা ইতোমধ্যে সফল হয়েছে এমন ব্র্যান্ড নাম ব্যবহারের চেষ্টা। ব্র্যান্ড বর্ধিতকরণের ফলে নতুন নাম পরিচিত করানোর জন্য কোম্পানিকে উচ্চ খরচ বহন করতে হয় না। এর ফলে নতুন পণ্যটি তাৎক্ষণিক ভাবে ব্র্যান্ড স্বীকৃতি পায়।
ব্র্যান্ড নাম নির্বাচন: ব্র্যান্ডের নাম খুব সতর্কতার সাথে রাখা উচিত। একটি ভালো নাম পণ্যের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বড় বড় কোম্পানিগুলো ব্র্যান্ড নাম পছন্দ করার জন্যে আনুষ্ঠানিক ব্র্যান্ড নাম নির্বাচন পদ্ধতি উন্নয়ন করেছে। ব্র্যান্ড একবার পছন্দ করা হয়ে গেলে তাকে অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. ব্র্যান্ড পৃষ্ঠপোষক সিদ্ধান্ত: পণ্য ব্র্যান্ডকৃত করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ব্র্যান্ডের পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারে উৎপাদনকারীর তিনটি বিকল্প থাকে।
প্রথমত: পণ্য প্রস্তুতকারকের ব্র্যান্ডে বাজার ছাড়া যেতে পারে। একে জাতীয় ব্র্যান্ড বলা হয়।
দ্বিতীয়ত: প্রস্তুতকারী পণ্যটি মধ্যস্থকারবারির নিকট বিক্রয় করে দিতে পারে যারা পণ্যটির প্রাইভেট ব্র্যান্ডকরণ করবে। একে মধ্যস্থকারী ব্র্যান্ড, বণ্টনকারী ব্র্যান্ড অথবা ডিলার ব্র্যান্ড বলা হয়।
তৃতীয়ত: প্রস্তুতকারক মিশ্র ব্র্যান্ড কৌশল অবলম্বন করতে পারে।
৪. বহু ব্র্যান্ড সিদ্ধান্ত: বহু ব্র্যান্ড কৌশলের ক্ষেত্রে বিক্রেতা একই পণ্য শ্রেণির জন্য দুই বা ততোধিক ব্র্যান্ড উন্নয়ন করে। উৎপাদনকারীরা বিভিন্ন কারণে বহু-ব্র্যান্ড কৌশল ব্যবহার করে।
প্রথমত, এর দ্বারা দোকানদারের সেলফে বেশি জায়গা দখল করা সম্ভব এবং কোম্পানির ব্র্যান্ডের প্রতি দোকানদারের নির্ভরশীলতা বাড়ে।
দ্বিতীয়ত, কিছু ক্রেতা ব্র্যান্ডের প্রতি এত অনুগত হয়ে পড়ে যে, তারা অন্য কোন প্রসারনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এ ধরনের প্রসারণ কর্মসূচির মাধ্যমে নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য নিন্ম দাসের পণ্য বাজারে ছেড়ে তাদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি উর্দ্ধমুখী প্রসারণের মাধ্যমে ধনাঢ্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায় ।
তৃতীয়ত, সংগঠনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ম্যানেজারের মধ্যে কার্য সম্পাদন প্রতিযোগীতা সৃষ্টিতে বহু ব্র্যান্ড ভূমিকা রাখে।
চতুর্থত, বহু-ব্র্যান্ডের কৌশল দ্বারা বিভিন্ন সুবিধা এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে পণ্যের জন্য বিভিন্ন অবস্থান নির্ধারণ করা যায়।
৫. পরিবার ব্র্যান্ড সিদ্ধান্ত: যে সকল প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ড ব্যবহার করতে চায় তাদের কিছু বিকল্প পছন্দের সুযোগ থাকে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে চার ধরনের ব্র্যান্ড নাম কৌশল ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন-কা
(ক) একক ব্র্যান্ড নাম: এক্ষেত্রে এক একটি পণ্যের জন্য একটি পৃথক ব্যান্ড নাম ব্যবহার করা হয়
(খ) প্রত্যেক পণ্য পরিবারের জন্য একটি নাম: যখন একটি কোম্পানি ভিন্ন ধরনের কয়েকটি পণ্য উৎপাদন করে তখন প্রত্যেকটি ভিন্ন পণ্য পরিবারের জন্য আলাদা আলাদা নাম ব্যবহার করা উচিত।
(গ) কোম্পানির ট্রেড নামের সাথে একক পণ্য নামের মিশ্রণ : এক্ষেত্রে কিছু কিছু কোম্পানি তার প্রত্যেকটি পণ্যের একক ব্র্যান্ড নামের সাথে কোম্পানির নামটিও জড়িয়ে থাকে।
(ঘ) সকল পণ্য পরিবারের জন্য একটি নাম: এক্ষেত্রে উৎপাদক তার উৎপাদিত সকল পণ্যের জন্য একটি ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে থাকে।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায়, একটি কোম্পানির জন্য ব্র্যান্ড ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে কোম্পানি তার পণ্য প্রতিযোগী কর্তৃক নকল করার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।ব্র্যান্ডের সার্বিক শক্তি যা বাজার অবস্থান এবং কোম্পানিতে ভ্যালু সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ব্র্যান্ড ইক্যুইটির ফলে ক্রেতারা অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় কোম্পানির ব্র্যান্ডকে মৌলিকভাবে বণ্টন করে এবং অগ্রাধিকার দেয়।
ব্র্যান্ড ইক্যুইটির সংজ্ঞা দাও....
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস pdf