প্রশ্ন ॥১.০৩॥ ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা কর ।অথবা, ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য চারটি বৈশিষ্ট্য লিখ। ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ :

ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি :

উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাস মানবজাতির অতীত কর্মের খতিয়ান বা দলিল । সময়ের নীরব সাক্ষী হিসেবে ইতিহাস একটি নির্দিষ্ট সময়ের বস্তুনিষ্ঠ বিবরণের কালানুক্রমিক চিত্র। জগতে প্রত্যেকটি বিষয় বা বস্তুর যেমন প্রকৃতি থাকে তেমনি শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাসও কিছু বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। ঐতিহাসিক কলিংডড বলেন, “ইতিহাস হচ্ছে এক ধরনের গবেষণা বা অনুসন্ধান ।

ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ :

নিম্নে ইতিহাসের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. উৎস ও তথ্যভিত্তিক : ও তথ্যসূত্র থাকা চাই, কারণ ইতিহাস শুধু কারো মনগড়া হৃদয় গাহী বর্ণনা নয়, বরং এটি যথাযথ তথ্য ও সূত্র কর্তৃক সমর্থিত একটি বর্ণনার সমাহার।

২. অনুসন্ধানমূলক : ইতিহাস অনুসন্ধানের বিজ্ঞান। মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত কর্মের উপর অনুসন্ধান করে এটি প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহ ও সম্পাদন করে থাকে। উৎপত্তিগত দিক থেকেও এটি সমর্থনযোগ্য। History শব্দটি এসেছে Historia থেকে যার অর্থ (An inquiry disigned to elicit truth)

history
history

৩. আত্মোপলব্ধিমূলক : ইতিহাস যেমন একদিকে অতীত ঘটনার বর্ণনা, তেমনি তার বিশ্লেষণ ও বর্ণনার ক্ষেত্রে যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি এটি আমাদের অতীত ঘটনার প্রেক্ষিতে মানুষের নিজের অবস্থান বা আত্মোপলব্ধিতে সাহায্যে করে থাকে ।

৪. নিরপেক্ষতা : নিরপেক্ষতা ছাড়া বিজ্ঞান কল্পনা করা যায় না। ইতিহাসকে গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞানের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একে অবশ্যই নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে হবে। ইতিহাস মূলত অতীত ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিশ্লেষণাত্মক বর্ণনা ।

৫. ধারাবাহিকতা : ধারাবাহিকতা ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। – অতীতের ঘটনার ধারাবাহিক ও কালানুক্রমিক বর্ণনা ইতিহাস । অর্থাৎ ইতিহাস অতীত ঘটনার এলোমেলো বর্ণনার পরিবর্তে সহজ ও সময়ানুক্রমিক বর্ণনা দিয়ে থাকে ।

৬. মানবীয়তা : যেহেতু মানবকর্ম। তাই ঘটনাগুলোর বর্ণনাও মানবীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে।

৭. অবিচ্ছিন্নতা : ইতিহাস কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে ও পরের ঘটনার সাথে লিপিবদ্ধকৃত ঘটনা যোগসূত্র থাকে। তবে পাঠের সুবিধার্থে ইতিহাসকে প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ বলে বিভক্ত করা হয়। তাই অবিচ্ছিন্নতা ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পদ্ধতিগত দিক দিয়ে ইতিহাস প্রামাণিক তথ্যের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে কর্ম সম্পাদনে অগ্রসর হয় এবং এটি মানুষের কার্যক্রমের ধারা অনুধাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ইতিহাস বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন বৈশিষ্ট্যের দ্বারা কর্ম সম্পাদন করে থাকে ।

ইতিহাস বই এর আর অন্যান্য প্রশ্ন

Share post:

Subscribe

Popular

More like this
Related